ইন্টারনেট আজ আমাদের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্দ অংশে পরিনত হয়েছে। হাজারো ঝুট ঝামেলা থাকা সত্তেও আমরা প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ থেকে ৬০ মিনিট ব্যয় করি ফেসবুক ফিড বা ইমেইল চেক করার জন্য। ব্যাপারটা এমন দাড়িয়েছে যে যারা কম্পিঊটারে বসেন না তারাও মোবাইলে নিজেদের ফেইসবুকটি একটু পরপর দেখতে ভালবাসেন। কোথায় গেলাম বা কার সাথে দুপুরে খেলাম থেকে শুরু করে পাশের বাসার আপুটি আজকে কিভাবে চুল বেঁধেছেন সবি শেয়ার করা চাই। সে যাই হোক – ব্যপারটা বাঙ্গালির রুচির। মোদ্দা কথা হোল আমরা ইন্টারনেট ব্যবহারে অতি অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি।
কিভাবে আমরা এই ইন্টারনেট কিনছি তা নিয়ে খুব বেশি ভাবছি কি? কিংবা -যে দামে কিনছি তা আদোও যুক্তিসঙ্গত কিনা? বাইরের দেশের সাথে আমি তুলনা করব না- কারন আপনারা হয়ত অনেকেই জানেনে বাইরের থেকে অনেক বেশি দামে আমরা কম গতির ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকি। আসুন দেখা যাক দেশে আমরা সাধারনত কিভাবে পেয়ে থাকি এই ইন্টারনেট ডাটাঃ-
মোবাইল ইন্টারনেটঃ
- বাংলালিঙ্ক
- গ্রামীনফোন
- এয়ারটেল
- সিটিসেল
- টেলিটক
মুলত এই পাঁচটি কোম্পানিই বাংলাদেশে মোবাইল ইন্টারনেট সেবা দিয়ে থাকে। তার মধ্য সিটিসেল সিডিএম-ই হবার কারনে তারা হ্যন্ডসেটে সরাসরি ইন্টারনেট সেবা দিতে পারে না বা তা খুবিই নগন্য। বাকিরা সবাই আপনার মোবাইল কিংবা ইউএসবি মডেম দিয়ে পিসিতে দুভাবেই ইন্টারনেট সেবা দিয়ে থাকে। তবে বলে রাখা ভালো এদের কারো সেবার মানি ভালো নয়। অত্যন্ত ধীর গতির এবং অপ্রতুল নেটওয়ার্ক কাভারেজ এদের প্রধান বৈশিষ্ট।
ওয়্যারলেস ইন্টারনেটঃ
১. কিউবি
২. বাংলালয়ন
যদিও এইদুটি কোম্পানি বাদে বাংলাদেশে লোকালি আর বেশ কিছু কোম্পানি আছে যারা ইন্টানেট সরবরাহ করে থাকে। খোদ বিটিআরসি – ও ইন্টারনেট লাইন প্রোভাইড করে থাকে। তবে আমজনতা এইদুটি কোম্পানিকেই চেনে যারা ব্রডব্যান্ডের কথা বলে আমাদের কাছে অতিরিক্ত দামে ন্যারোব্যান্ড বিক্রি করে আসছে। তবে আপনি যদি বলেন প্রফেশনাল কাজের জন্য পানি ইন্টারনেট ব্যাবহার করবেন তবে আমি আপনাকে এদের দুটির মধ্য থেকে যেকোন একটিকেই বেছে নিতে বলবো। এদের ডাটা প্লান প্রতিযোগিতার কারনে একি দামের হয়ে থাকে। নিছের লিঙ্ক দুটি থেকে একবার ঘুরে আসুন ডাটা প্লান দেখার জন্য।
কিউবিঃ http://www.qubee.com.bd/monthly-package
বাংলালায়নঃ http://banglalionwimax.com/index.php/products-a-services/postpaid-plans
সাম্প্রতিক সময়ের সবথেকে আলোচিত হলো টেলিটকের 3G ডাটা প্লান। তারা অনেক কমদামে মোবাইল এবং পিসি উভয়ের জন্যই উচ্চগতির ডাটা প্রোভাইড করার চেষ্টা করছে। কিন্তু সবথেকে বড় অসুবিধার কথা হলো টেলিটকের নেটওয়ার্ক কাভারেজ খুবি-ই নিন্মমানের এবং বেশিরভাগ জায়গাতে তা পাওয়াই যায় না। তবে ফুল কাভারেজ যেসব এলাকাতে আছে সেখানে টেলিটকের থেকে বেটার কোন অপশন আপনি পাবেন না। বর্তমানে টেলিটকের ডাটা প্লানটি নিন্মরুপ।
কিউবি এবং বাংলালায়ন ও এখন পর্যন্ত দেশের সব জায়গায় পোছাতে পারেনি। এমনকি ঢাকার বেশিরভাগ এলাকাতেই তাদের নেটওয়ার্কের ব্যপক নাচানাচি দেখা যায়। তারপরেও এই তিনটি কোম্পানির সেবার মুল্যমান মোটামুটি সাধ্যর মধ্যে আছে। আসুন দেখা যাক আমাদের সিটিসেল কি করছে। যারা ইন্টারনেট নিয়ে প্রথম বিজ্ঞাপন দেয়া শুরু করেছিল তাদের ডাটা প্লানিং কি রকম?
বাংলাদেশে ইন্টারনেট জামানার প্রথম দিকে এরাই ছিল বস আর আজকে এদের এই বেহাল দশা। মার্কেট সম্পর্কে তাদের বিন্দুমাত্র কোন ধারনা নেই। যেখানে বাকিরা ১৫০০ টাকায় আনলিমিটেড ডাটা দেয় তখন তারা ২২০০ টাকায় ২গিগাবাইট বিক্রি করার প্লান করে।
এর থেকে হাস্যকর আর কি হতে পারে। ভাই আপনি যদি সুস্থ মস্তিস্কের হয়ে থাকেন আপনি কিভাবে এই প্লান নেবেন? আমি প্রথম দিকে সিটিসেলের পোস্টপেইড প্লান চালাতাম। তারপর বাধ্য হয়েই তা বন্ধ করে দেই। কারন এত দাম দিয়ে আমি তখনি ইন্টারনেট কিনতে পারি যখন আর কোথাও তা কমদামে পাওয়া যাবে না। কিন্তু বাংলালায়ন এবং কিউবি আপনাকে এখন মাত্র ১৫০০টাকায় সারামাস আনলিমিটেড ডাটা কানেকশন দিতে পারে।
তাই আমার দেখা সব থেকে বাজে ডাটা প্লান হলো সিটিসেলের। যারা চোখকান বুজে এখনো বিভিন্ন ধরনের প্রমোশান চালিয়ে যাচ্ছে। হায়রে বোকার দল। যে তরুন প্রজন্মের বিশাল অংশ ইন্টারনেট ব্যবহার করে তারা কি এতই বোকা।
আপনাদের জন্য আমার সাজেশন হলো অতি শীঘ্রই মার্কেট যাচাই করুন এবং আপনাদের প্লান গুলো পরিবর্তন করুন। নাহয় আপনারা ইন্টারনেট সেবা দেয়াই বন্ধ করে দিন। 🙂 আপনাদের গ্রাহক কমে এখন তলানিতে তা কি একবারও দেখতে পান না?