হোস্টিং এবং ডোমেইন নিয়ে ঝামেলায় পড়েননি এরকম অনলাইন প্রফেশনাল খুঁজে পাওয়া দুস্কর। বিশেষ করে যারা একদম নতুন ভাবে অনলাইনে এফিলিয়েট মার্কেটিং অথবা ব্লগিং শুরু করতে চাচ্ছেন তাদের সমস্যাটাই বেশি হয়।
এই লিখাটা তাদের জন্যই যারা একদম নতুন অথবা চিন্তা করে বেড়াচ্ছেন বাজেট সল্পতার মধ্যে কোন হোস্টিংটি কিনলে আপনার টাকাটা জলে যাবে না।
ফ্রী-হোস্টিং
ফ্রী হোস্টিং এর কথা প্রথমেই তুলে আনলাম এই কারনে যে আমরা বলতে গেলে সবাই – প্রথম দিকে চেষ্টা করে থাকি একটা ফ্রী হোস্টিং এ আমাদের সাইট বানানোর। অনেকেই তার সাথে একটা ডোমেইন কিনে থাকেন, অনেকেই আবার শুধুমাত্র ফ্রী সাব-ডোমেইন নিয়েই কাজ করেন।
যাই করে থাকুন না কেন আগে, এখন থেকে জেনে রাখুন – ফ্রী হোস্টিং বলতে আদতে কিছু নাই। যে সকল ফ্রী হোস্টিং আমরা মার্কেটে দেখতে পাই তারা আসলে কোন পেইড হোস্টিং এর স্যাম্পল বা মার্কেটিং এর জন্য তৈরি করা হয়েছে। বেশিরভাগ ফ্রী হোস্টিং আপনাকে এডভারটাইজমেন্ট দেখাবে অথবা খুব বেশীদিন আপনাকে সাইট হোস্ট করতে দেবে না।
আমি নিজেই এর ভুক্তভোগি ছিলাম একসময়। অনেকদিন হোস্ট করার পরে একদিন সকালে উঠে দেখি আমার ব্লগ আর নাই। তারা একাউন্ট ব্যান করে দিয়েছে। তাদের কোন ধরনের টার্ম এন্ড রুলস মনে হয় আমার ব্লগের সাথে যায়নি, তাই বিনা নোটিশে একাউন্ট ব্যান।
ফ্রি হোস্টিং এর আরেকটা বড় সমস্যা হল এর রিসোর্স লিমিটেড এবং আপনাকে খুব বেশি ব্যান্ডউইথ তারা দেবে না।
এত কথা বলার একটাই কারন, পারলে ফ্রী হোস্টিং থেকে দূরে থাকুন। এরা আপনার কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য নয়, আপনি আশানুরুপ সাপোর্ট ও পাবেন না।
তারপরেও যারা প্র্যাক্টিসের জন্যে ফ্রি হোস্টিং খুঁজছেন তাদের জন্য আমার ব্যবহার করা তিনটা ফ্রী হোস্টিং এর কথা বলি-
০১. ব্লগার বা ব্লগস্পট (Blogger.com)
বেশ অনেকদিন আমি ব্লগস্পটে সাইট হোস্ট করেছিলাম। এই সার্ভিসটি গুগলের। কাজেই এই হোস্টিং এর স্পীড এবং আপটাইম নিয়ে কোন সমস্যায় পড়তে হবে না। এখানে আপনি যত খুশি ব্লগ বানাতে পারবেন।
আমার মনে হয় প্রায় সবাই এর কথা জানেন। আপনার একটি ফ্রী জিমেইল একাউন্ট থাকলেই আপনি ব্লগারে একটি একাউন্ট খুলতে পারবেন। একটা একাউন্টের আওতায় আনলিমিটেড ব্লগ খোলা যায়।
সুবিধাঃ
০১. গুগলের হোস্ট করা কাজেই সাইটের স্পীড এবং আপটাইম নিয়ে কোন সমস্যায় পড়বেন না।
০২. যত খুশি ব্লগ খোলা যাবে।
০৩. প্রতিটি ব্লগের জন্য আলাদা সাবডোমেইন পাবেন, চাইলে নিজের .com/.net/.info ইত্যাদি ডোমেইন লাগাতে পারবেন।
০৪. এডসেন্স এবং গুগল এনালিটিক্স খুব সহজেই ইমপ্লিমেন্ট করা যায়।
অসুবিধাঃ
০১. এটি ফ্রি – কাজেই গুগল যেকোন সময় আপনার ব্লগটি ব্যান করে দিতে পারে।
০২. সাপোর্ট খুবই অল্প পরিমানে পাবেন, তবে এক্টিভ কমিউনিট আছে।
০৩. নিজস্ব ব্লগ টেমপ্লেট বা ডিজাইনের পরিমান খুবই কম। একটু এক্সপার্ট না হলে আপনি কাস্টমাইজেশন করতে পারবেন না।
আপনি একটু খুঁজলেই অনেক প্রিমিয়াম টেমপ্লেট ডিজাইন পাবেন মার্কেটে, কিন্তু আপনাকে তা কিনতে হবে।
০২. ওয়ার্ডপ্রেস ডট কম (WordPress.com)
আমার মতে এটিই হওয়া উচিত বেস্ট ফ্রি হোস্টিং। যারা ওয়ার্ডপ্রেস নিয়ে কাজ করবেন বা এফিলিয়েট মার্কেটিং এবং ব্লগিং এর সাথে যুক্ত হবেন তাদের জন্য প্র্যাক্টিসের একটি আদর্শ জায়গা।
ব্লগ খোলার জন্যে আপনাকে একটি ওয়ার্ডপ্রেস ডট কমের একাউন্ট খুলতে হবে, এটি ফ্রি।আপনার ব্লগের জন্যে wordpress.com এর একটি সাবডমেইন দেয়া হবে আপনাকে।
আপনি যখন আপনার নিজস্ব হোস্টিং এবং ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করবেন তখনও আপনার এই আকাউন্টটি কাজে লাগবে।
সুবিধাঃ
০১. ওয়ার্ডপ্রেসের জন্য অপ্টিমাইজ হোস্টিং, এর আপটাইম এবং স্পীড এর সাথে পাল্লা দেয়ার মত ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং খুব কমই আছে।
০২. যারা ভবিষ্যতে ওয়ার্ডপ্রেস নিয়ে কাজ করবেন তাদের প্র্যাক্টিস করার আদর্শ জায়গা।
০৩. আনলিমিটেড ব্লগ খুলতে পারবেন।
০৪. চাইলে নিজস্ব ডোমেইন আপনার ব্লগের সাথে লাগাতে পারবেন। এমকি একটা ব্লগে একাধিক ডোমেইন ও লাগানো যায়।
অসুবিধাঃ
০১. ফ্রী ব্লগের হোস্টিং সিমাবদ্ধ, মাত্র ৩ গিগাবাইট।
০২. সাপোর্ট শুধুমাত্র কমিউনিটিতেই পাবেন।
০৩. ইচ্ছেমত প্লাগিন এবং থিম ইন্সটল করতে পারবেন না।
০৪. চাইলেই আপনার এডভারটাইজমেন্ট বা এফিলিয়েট লিঙ্ক লাগাতে পারবেন না।
০৫. আপনার ব্লগ নিয়মের বিরুদ্ধে গেলে বিনা নোটিশে ব্যান করা হবে।
০৬. ওয়ার্ডপ্রেস ডট কম থেকে ডোমেইন কিনতে গেলে আপনার একটু বেশি খরচ করতে হবে। সাধারন ভাবে যেখানে আপনি ১০-১১ ডলারে একটী ডোমেইন কিনতে পারবেন সেখানে তারা ১৮ ডলার নেবে একটা ডোমেইন কেনার জন্য।
অলরেডি যদি আপনার একটা টপ লেভেল ডোমেইন থেকেও থাকে তবে তা আপনার ব্লগের সাথে কানেক্ট করতে গেলেও আপনাকে গুনতে হবে ১৩ ডলার। আগেই বলেছি ফ্রি মানেই কিন্তু ফ্রি নয়।
তবে এই টাকায় আপিনি যে সার্ভিস পাবেন তা আর কেউ দিতে পারবে না। ওয়ার্ডপ্রেসের প্রাইসিং প্লানটায় একটু চোখ বুলান যদি আপনি তাদের পেইড হোস্টিং ব্যবহার করতে চান।
কাজেই দেখতে পারছেন ফ্রি এবং প্রিমিয়াম হোস্টিং এর মধ্যের তফাত।
আমার সাজেশন হল – আপনি এই দামে নিজের হোস্টিং এবং ডোমেইন কিনতে পারবেন।
০৩. বাইট হোস্টের সি প্যানেল (bytehosting)
অনেক আগে আমি বাইট হোস্টের ফ্রি সি-প্যানেল হোস্টিং ব্যবহার করতাম। খুবই লিমিটেড পরিসরে সেটা ছিল একটা দুর্দান্ত এক্সপিরিয়েন্স। যারা নিজেই নিজের ব্লগ ইন্সটল করতে চান এবং দেখতে চান পেইড হোস্টিং কি রকম হতে পারে, এটি তাদের জন্য একটা ডেমো হিসেবে কাজ করবে।
এটি আসলে তাদের পেইড হোস্টিং সেল করার জন্য একটা মার্কেটিং পন্থা। কিন্তু আমদের দরকার এনভাইরনমেন্ট বোঝা কিভাবে একটা হোস্টিং কাজ করে। খুব সহজেই আপনি একটা হোস্টিং রেজিস্টার করে তাদের দেয়া সাবডোমেইন ব্যবহার করে তা জানতে পারছেন।
এই হোস্টিং আপনাকে ১ গিগাবাইট জায়গা এবং ৫০ গিগাবাইট ডাটা ট্রান্সফার/মাসে ফ্রিতে দেবে।
সুবিধাঃ
০১. ফ্রি হোস্টিং যেখানে আপনি FTP, Database এবং সফটওয়ার ইন্সটল করতে পারছেন।
০২. যদি ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল করে থাকেন তবে নিজের ইচ্ছামত থিম এবং প্লাগিন ইন্সটল করতে পারবেন।
০৩. ওপেনসোর্স প্রায় সব সফটওয়ার পাবেন অটো ইন্সটলেশনে।
অসুবিধাঃ
০১. হোস্টিং বেশ ধীর গতির এবং আপঅটাইম ও ভালো না।
০২. একাউন্ট ব্যান হতে পারে বিনা নোটিশে।
০৩. হোস্টিং রিলেটেড যেকোন ইস্যুতে সাপোর্ট পাবেন না।
ঠিক এইরকম আরেকটি হোস্টিং আছে যারা ফ্রিতে ভিসতা প্যানেল দিয়ে হোস্ট করে থাকেঃ 000space.com . এরা বাইট হোস্টের মত হলেও তার থেকে বেশি জায়গা এবং ব্যান্ডউইডথ দিয়ে থাকে। তবে এদের সি-প্যানেল দেখতে একটু আলাদা রকমের। এক নজরে এদের ফিচার গুলো দেখে নিন।
মার্কেটে এরা বাদেও আরো প্রচুর ফ্রি হোস্টিং প্রোভাইডার আছে। একটা ব্যপার বেশ ভালো করে মনে রাখা দরকারঃ –
ফ্রি হোস্টিং কখনই পেইড হোস্টিং এর সমতুল্য নয়
পেইড হোস্টিং
ফ্রির কথা বাদ দেই, আসুন পেইড হোস্টিং নিয়ে কিছু কথা বলা যাক।
যখনই আপনি প্রফেশনাল ভাবে ব্লগিং অথবা এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে চাইবেন অথবা আপনার নিজস্ব প্রতিষ্ঠানের ওয়েব সাইট বানাবেন, আপনার প্রয়োজন একটি ভালো মানের হোস্টিং।
হোস্টিং সম্পুর্ন ভাবে নির্ভর করে আপনার বাজেট এবং কি ধরনের সাইট আপনি বানাবেন তার উপর। আমি আজকে কয়েকটি শেয়ার্ড হোস্টিং নিয়ে আলোচনা করব। এফিলিয়েট সাইট এবং মাঝারি মানের সাইট এর জন্য এই ধরনের হোস্টিং বেশ ভাল কাজে দেয়।
মার্কেটে আছে দামের ভিন্নতা এবং কোয়ালিটিতে পার্থক্য। আমার মনে আছে ২০০৫ সালের দিকের কথা, যখন অনলাইনে ইন্টারন্যাশনাল পেমেন্ট করাটা আমার কাছেও একটা কঠিন ব্যাপার ছিল, তখন আমি বাংলাদেশের এক প্রোভাইডারের কাছ থেকে হোস্টিং কিনেছিলাম। তারা কোন ধরনের সাপোর্ট দিত না এবং একবছর পরে আমার সাইট কোন ধরনের ব্যাক আপ বাদেই গায়েব হয়ে যায়।
অনেক চেষ্টা করেও তা আমি উদ্ধার করতে পারিনি। সেই থেকে আমি আর কখন বাংলাদেশি প্রোভাইডারদের থেকে হোস্টিং কিনিনি।
২০১৫ সালে এসে কিন্তু আমি দেখেছে আমাদের দেশেই অনেক ভালো ভালো মানের হোস্টিং বেচা কেনার সাইট হয়েছে। যদিও আমার সৌভাগ্য হয়নি তাদের সার্ভিস রিভিউ করার। আপনারা কেউ ব্যবহার করে থাকলে জানাতে ভুলবেন না।
এই সকল কারনে আমি নিজের ক্লায়েন্ট এবং পরিচিতদের জন্য ছোট্ট পরিসরে একটা রিসেলার হোস্টিং নিয়ে ২০১৩ এর দিকে নিজেই US হোস্টিং সেল শুরু করেছি। আসুন দেখে নেয়া যাক পরিচিত কিছু হোস্টিং যা আপনি আপনার স্বল্প বাজেটের মধ্যে কিনতে পারেন।
শেয়ার্ড হোস্টিং এনভাইরন্মেন্টে জাস্ট হোস্ট অনেক কম দামে আপনাকে হোস্টিং দেবে। প্রথম দিকে তারা সব কিছু আনলিমিটেড বললেও এখন আর সেরকম দিচ্ছে না। আপনি যত লম্বা সময়ের জন্য হোস্টিং কিনবেন আপনার তত বেশি টাকা বাঁচবে।
সুবিধাঃ
০১. কেনার সময় বেশি ২-৩ বছরের জন্য কিনলে অনেক কম দাম পড়বে।
০২. তিন ধরনের প্যাকেজ বিদ্যমান Basic, Plus এবং Pro. আপনার পছন্দ অনুযায়ী বেছে নিতে পারছেন।
০৩. মানি ব্যাক গ্যারান্টি আছে, যদি হোস্টিং আপনার পছন্দ না হয়।
০৪. একটা ফ্রী ডোমেইন পাবেন ইয়ারলি প্যাকেজের সাথে।
অসুবিধাঃ
০১. সার্ভার স্লো থাকে অনেক সময় এবং ডাউন টাইম প্রচুর। লম্বা সময় ধরে না হলেও বার বার এই জিনিস বিরক্তিকর।
০২. পেমেন্ট সিস্টেম বাংলাদেশ থেকে পেপাল এবং আপনাকে পেমেন্ট প্রুফ দিতে হবে।
০৩. পেওনিয়ার কার্ড দিয়ে কিনতে গেলে নাও পারতে পারেন এবং প্রচুর ঝামেলায় পড়তে হতে পারে।
০৪. লাইভ সাপোর্টের দেখা পেতে ৩০ মিনিটেরও বেশি সময় লাগতে পারে।
একনজরে তাদের প্রাইসিং প্লানঃ –
টেস্ট করার জন্য বেসিক প্লান দিয়ে শুরু করতে পারেন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী চাইলে পরে আপগ্রেড করতে পারবেন।
০২. হোস্ট মন্সটার (Host Mosnter)
হোস্ট মন্সটারে দাম জাস্ট হোস্ট থেকে কিছু বেশি। এদের সার্ভিস খুব একটা খারাপ না। তবে আমার ক্লায়েন্টের বেশ কিছু সাইট হ্যাক হবার পর আমরা আর এদের সার্ভিস ব্যবহার করছি না। একনজরে এদের প্রাইসিং প্লানঃ-
মান্থলি প্রাইস বেশি হলেও আপনি জাস্ট হোস্টের থেকে বেশি স্পেস পাচ্ছেন এখানে। তবে ৫০০০ টাকার থেকেও কমে আপনি সারা বছরের জন্য নিশ্চিন্তে থাকতে পারবেন।
সুবিধাঃ
০১. পারসোনাল বা সাধারন অফিসিয়াল সাইটের জন্য বেশ ভালো
০২. সার্ভার মোটামুটি ভাবে ফাস্ট।
০৩. যদি অনেক গুলো এফিলিয়েট সাইট করতে চান তবে এদের প্রো সার্ভিস নিয়ে দেখতে পারেন।
০৪. ৩০ দিনের মানি ব্যাক গ্যারান্টি আছে।
০৫. বাতসরিক প্যাকেজের সাথে ১ টা ফ্রি ডোমেইন পাবেন।
অসুবিধাঃ
০১. লাইভ সাপোর্ট খুবিই দুর্বল।
০২. যদি নিজের সাইট নিজে ব্যাকআপ না রাখেন তবে ঝামেলায় পড়তে পারেন।
হোস্ট গেটরের সার্ভিস আমি প্রায় ২ বছর ব্যবহার করেছি কোন ধরনের সমস্যা বাদেই। শেয়ার্ড হোস্টিং এর মধ্যে আমার কাছে হোস্ট গেটরকেই বেস্ট বলে মনে হোত। কিন্তু EIG ( Endurance International Group) কোম্পানী কিনে নেয়ার পর থেকেই তাদের সার্ভিস এবং সাপোর্ট কোয়ালিটি কমতে থাকে এবং আমিও একসময় বাধ্য হই সাইট মুভ করার।
তারপরেও যারা নতুন ভাবে শুরু করতে চাচ্ছেন তাদের জন্য কম দামে একটা বেশ ভালো হোস্টিং হতে পারে এটি। একনজরে তাদের বর্তমান প্রাইসিং প্লানঃ –
এখানেও দেখতে পারছেন অনেক বেশি দিনের জন্য কিনলে আপনার লাভ।
সুবিধাঃ
০১. মোটামুটি মানের ভারি সাইট হলেও এদের শেয়ার্ড হোস্টিং এ আপনি তা চালাতে পারেন।
০২. ডাউনটাইম খুব সাম্প্রতিক কিছুটা কমেছে।
০৩. রেগুলার ব্যাকআপ নেবার সুবিধা আছে।
০৪. আপনার যেকোন একটি সাইট এরা ফ্রিতে ট্রান্সফার করে দেবে।
০৫. সি-প্যানেল দেখতে অনেক সাজানো এবং কার্যকর।
অসুবিধাঃ
০১. হোস্টিং এর দাম অন্যদের তুলনায় একটু বেশি।
০২. সাপোর্ট অনেক দীর্ঘ সময় নেয়, আর লাইভ সাপোর্ট খুবই দুর্বল।
০৩. সার্ভার স্পীড আগের থেকে অনেক খারাপ হয়ে গেছে।
এছাড়াও খুব সাম্প্রতিক তারা ক্লাউড হোস্টিং সার্ভিস চালু করেছে। যারা আপটাইম বা সার্ভার রিসোর্সেস নিয়ে চিন্তিত তারা হোস্ট গেটরের ক্লাউড হোস্টিং ব্যবহার করে দেখতে পারেন।
শেয়ার্ড হোস্টিং এর মধ্যে আমি বর্তমানে ব্লু হোস্টকেই প্রাধান্য দেই বেশি। গত একবছরে এদের আপ্টাইম এবং সার্ভার স্পিড আমার বেশ ভালো লেগেছে। চলুন দেখে নেয়া যাক এদের প্রাইসিং প্লানঃ
সুবিধাঃ
০১. আপটাইম ভালো
০২. বিশেষ করে ওয়ার্ডপ্রেস হোস্ট করার জন্য আদর্শ হতে পারে।
০৩. দাম তুলনামুলক ভাবে অনেক কম।
অসুবিধাঃ
০১. সাপোর্ট খুবই দুর্বল।
০২. নিজের সাইট ব্যাকআপ নিজেকেই রাখতে হবে। হ্যাক হয়ে গেলে বা অন্য কোন কারনে এদের আপনি খঁজে পাবেন না।
০৩. সি-প্যানেল দেখতে জাস্ট হোস্টের মত এবং কিছুটা ঝামেলার।
০৪. আপনার FTP মাঝে মাঝেই ঝামেলা করতে পারে।
ব্লু হোস্ট এর ক্লাউড হোস্টিং এবং স্পেশালাইজড ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং আছে। কাজেই আপনার এফিলিয়েট সাইট বানানোর জন্য আদর্শ হতে পারে। Blue Hosting নিয়ে আমার একটা আলাদা রিভিউ আছে চাইলে পড়তে পারেন।
যেকোন হোস্টিং ই আপনি ব্যবহার করতে পারবেন আপনার ব্লগিং বা এফিলিয়েট সাইটের জন্য। তবে আমি যে দুটো জিনিস সব থেকে বেশি গুরুত্ব দেই তা হলঃ-
০১. সার্ভারের আপটাইম এবং
০২. সাপোর্ট
সাপোর্ট যদি ভালো না হয় এবং আপনাকে ঘন্টা খানেক অপেক্ষা করতে হয় তাদের দেখা পবার জন্য তবে সেখান থেকে হোস্টিং না কেনাই ভালো। উপরের ৪ টি হোস্টিং এর প্রতিটিই বর্তমানে EIG এর অধীনে। কাজেই তারা মোটামুটি একি ধরনের অফার এবং সার্ভিস দিয়ে থাকে।
আপনি যদি নিজে ডেভেলপার হয়ে থাকেন তবে অনেক ঝামেলা থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন এবং আপনাকে সাপোর্টের পিছনে দৌড়াতে হবে না।
০৫. নেইমচিপ (Namecheap Hosting)
সাপোর্টের দিক থেকে আমি বর্তমানে সব থেকে ভালোবাসি নেইমচিপ (Namecheap.com) হোস্টিং কে। মূলত ডোমেইন রেজিস্টার হিসেবে ব্যবসা শুরু করলেও তারা এখন হোস্টিং এও অনেক এগিয়ে গেছে। দিনে দিনে তাদের হোস্টিং এর বয়সও অনেক হোল।
এখনে মাত্র ১০ ডলারের বিনিময়ে আপনি প্রথম বছর হোস্টিং করতে পারবেন।
সুবিধাঃ
০১. হোস্টিং এর দাম অনেক কম অন্যদের তুলনায়।
০২. আপনি পেওনিয়ার কার্ড, পেপাল, মাস্টারকার্ড কিংবা গুগল চেকাআউট দিয়ে পেমেন্ট করতে পারবেন।
০৩. বেটার সাপোর্ট সিস্টেম।
০৪. আপটাইম এবং সার্ভার স্পিড অনেক ভালো।
অসুবিধাঃ
খুব একটা খুঁজে পাইনি। সাইট অনেক বড় হলে বা অনেক রিসোর্স ব্যবহার করলে ডাউন থাকতে পারে। তবে সেক্ষত্রে আপনার দরকার আরো ভালো প্যাকেজে আপগ্রেড করা।
গুনগত মান এবং দামের বিচারে আমি সাজেস্ট করব চোখ বন্ধ করে নেইমচিপের হোস্টিং ব্যবহার করার জন্য। আমি অনেক বছর যাবত এদের কাস্টমার এবং নেইমচিপের সার্ভিসে আমি এখনও পর্যন্ত সন্তুষ্ট।
যেই হোস্টিং ই কিনতে যান না কেন, আগে গুগলে একটু সার্চ করে দেখে নেবেন তাদের কোন ডিস্কাউন্ট কুপন আছে নাকি। কুপন ব্যবহার করলে বেঁচে যেতে পারে আপনার অনেক গুলো টাকা।
আরো কিছু কথাঃ-
- যাদের অনেক বড় সাইট হবে তারা ডেডিকেটেড বা VPS হোস্টিং ব্যবহার করতে পারেন। আমি পারসোনালি Digital Ocean কে পছন্দ করি। এদের দাম এবং সার্ভার আপটাইম ভালো।
- জ্বী, মার্কেটে ভালো ভালো আরো অনেক শেয়ার্ড হোস্টিং সার্ভিস আছে, কিন্তু এখানে যেগুলো দিয়েছি তা আমি পারসোনালি ব্যবহার করেছি অথবা এখনো করছি।
- হোস্টিং এবং ডোমেইন এক জায়গা থেকে কিনলে কোন সমস্যা নেই। আমার আছে অনেক বছর ধরে।
- VPS হোস্টিং ব্যবহার করলে তার টেকনিক্যাল জ্ঞান আপনার থাকতে হবে। ওটা Managed সার্ভার না। আপনি ওখানে সি-প্যানেল ফ্রিতে পাবেন না।
- প্রথম বছর বা প্রথমবার যে দামে হোস্টিং কিনবেন, আপনার Renewal Price বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তার থেকে বেশি হবে। অধিকাংশ হোস্টই আপনাকে প্রথম বছর ছাড় দিয়ে থাকে।
ডোমেইন কোথা থেকে কিনব?
ডোমেইন আপনি দেশি বিদেশি যেকোন সার্ভিস সেলারের কাছ থেকে কিনতে পারেন। তবে সব সেলারই কিন্তু আপনাকে দাম এবং ডোমেইন প্যানেল একরকম দেবে না।
আমার পারসোনাল চয়েজ সর্বদা থাকে নেইপচিপ থেকে ডোমেইন কেনার। এদের ডোমেইন প্যানেল অসম্ভব রকমের সুন্দর ভাবে সাজানো এবং প্রচুর সার্ভিস আছে। ফ্রি তে আপনি প্রথম বছরের Whois Gaurd পাবেন।
Godaddy.com থেকে ডোমেইন কিনলে আপনি আরো কিছু কমে কিনতে পারবেন, কিন্তু রিনিউয়াল চার্জ কিন্তু একই থাকবে না। আমি গো-ড্যাডি পছন্দ করি না যে কারনে – এদের ডোমেইন প্যানেল লোড হতে অনেক সময় নেয় এবং পেপাল বাদে আমাদের দেশ থেকে সাধারনের জন্য পেমেন্টের আর কোন ওয়ে নাই।
নেইমচিপ থেকে আপনি সরাসরি আপনার পেওনিয়ার কার্ড দিয়েই সব কিছু কিনতে পারবেন।
একটা বুদ্ধি হোল – গো-ড্যাডি থেকে ১ বা ২ বছরের জন্য ডোমেইন কিনে এরপর তা নেইমচিপে মুভ করে নেয়া। এতে আপনার কিছু টাকা বাঁচবে। নেইমচিপ অনেক সময় মাত্র ১ ডলারে ডোমেইন মুভ করার অফার দিয়ে থাকে। এই ১ ডলারের বিনিময়ে ডোমেইন মুভ করার পরে আপনার ডমেইনে আরো একবছর মেয়াদ যুক্ত হয়ে যাবে।
বাংলাদেশি রিসেলারের কাছ থেকে ২০০৫ এর পর আর কোন ডোমেইন কিনিনি তাই তাদের সম্পর্কে কোন মন্তব্য করতে পারছি না।
অনেকেই গো-ড্যাডি থেকে ডোমেইন এবং হোস্টিং কিনে বেশ ভালো বলেছেন কিন্তু গো-ড্যাডির হোস্টিং নিয়ে আমার অভিজ্ঞতা ভালো না।
এখানে আমি খুব বিস্তারিত ভাবে কোন হোস্টিং নিয়েই বলতে পারিনি, লিঙ্ক দিয়ে দিয়েছি, যাচাই বাছাইয়ের দায়ীত্ব আপনার নিজের।
আপনার প্রশ্ন এবং মুল্যবান মতামত জানলে হয়ত আমি এখানে আরো অনেক কিছু সংযুক্ত করতে পারব।
খুব ভালো লাগছে পোস্ট পড়ে , ধন্যবাদ ভাইয়া কষ্ট করে এত বড় পোস্ট উপহার দেওায়ার জন্য
আপনাকেও ধন্যবাদ 🙂
এত সুন্দর এবং বিস্তারিত ভাবে হোস্টিং সম্পরকে আলোচনা করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমি টুকিটাকি জানতাম তবে আপনার এই পোস্ট পড়ে অনেক কিছু সম্পর্কে পরিস্কার ধারনা পেলাম।
উপকৃত হয়েছেন জেনে ভালো লাগল।
হোস্টিং এর এসব বিষয়ের বিস্তারিত বর্ণনা অনেক খুজেছি। কিন্তু মন মত হেল্প পাই নি। আপনার ইংরেজি ব্লগ সবসময় পড়ি। সেখান থেকেই এখানে আসা। আর এখান থেকেই ব্যাপারটি ক্লিয়ার হলো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। আশা করি এফিলিয়েট এর উপর কিছু গাইডলাইন আমাদেরকে দিবেন। ধন্যবাদ।
ভালো লেগেছে জেনে আনন্দিত হলাম। সামনে চেষ্টা করব এফিলিয়েট নিয়ে লেখার।
আপনার হোষ্টিং বিষয়ক লেখাটা সত্যিই দারুন ও তথ্য নির্ভর ছিলো ! প্রত্যেক সাইট আসলেই যথাযথ, যাচাই বাছাই করেই তালিকাবদ্ধ করেছেন দেখে ভাল লাগলো। অনলাইনের উপড় সঠিক তথ্য দেওয়ার মত বাংলা সাইটের সংখ্যা খুবই কম তবে, তার মধ্যে আপনি আছেন।
অনেক ধন্যবাদ।
আপনার নিবন্ধ খুব ভালমানের হয়েছে বুজাও হয়েছে
আমি আপাতত একটা ডোমেইন ক্রয় করতে চাচ্ছি ব্লগারের জন্য তবে পেমেন্ট করার ব্যাবস্থা নাই। আপাতত হোস্টিং না নিলে চলবে কি?
নেইমচিপ (Namecheap Hosting) এ তো বিকাশ দিয়ে কিনতে পারছি না বিকাশ দিয়ে কেনার জন্য ভালো কোনটা??/
বিকাশ দিয়ে নেইমচিপ থেকে কেনা যায় না। আপনি দেশী কোন প্রোভাইডার থেকে ট্রাই করে দেখুন।
১) কিংহোস্টবিডি একটি ডোমেইন রেজিষ্ট্রেশন এন্ড হোস্টিং সার্ভিস প্রোভাইডার কোম্পানি যা বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর সকল জায়গায় সাপোর্ট দিয়ে থাকে।
Where is your server hosted?
আমি বেশ কয়েকদিন আপনার এই ফিচারটি পড়েছি আমার ভালো লেগেছে। আমি জানতে চাচ্ছি আমার একটি রানিং নিউজ পোর্টাল যেটি গো ডেডি থেকে হোস্টিং নেয়া, সেটিকে ক্লাউড হোস্টিং এ নিতে চাচ্ছি, তুলনামুলক কম খরচে কোন কোম্পানীর ক্লাউড হোস্টিং ভালো হবে। জানালে উপকৃত হবো।
আপনি ডিজিটাল ওশেন (Digital Ocean) এর প্রাইসিং দেখতে পারেন। কিন্তু এটি ব্যবহারের জন্য কিছুটা সার্ভার মেইন্টেনেন্স জানতে হবে। এরা ম্যানেজড সার্ভার না।
ভাই,
নেইমচিপ এর Shared hosting ‘Professional’ প্যাকেজটি ওয়ার্ডপ্রেসের চলমান ১০ জিবি স্পেসের ওয়েবসাইটের জন্য কেমন হবে? নেইমচিপ কি সিপ্যানেল দেয়?
আপনার পরামর্শ আমার জানামতে সঠিক ও নিরপেক্ষ বলে মনে হচ্ছে। তাই আপনার মূল্যবান পরামর্শ কামনা করছি।
sabbir
Yes, they provide cPanel.
ভাই,
আমার প্রশ্ন দুটি ছিল, একটির উত্তর পেয়েছি আরেকটির অপেক্ষায় থাকলাম।
আপনাকে ধন্যবাদ।
Hosting space does not matter. What matters is how busy your website is. If you need good bandwidth and have super busy website, then go for a VPS first.
ভালো লাগলো পড়ে , অনেক অজানা কিছু জানতে পারলাম, ধন্যবাদ আপনাকে
আমি godaddy.com থেকে ডোমেইন কিনতে চাচ্ছি. কিন্তু ভিসা কার্ড দিয়ে কিনতে পারিনি। আমার কাছে মাস্টার কার্ড নেই। এখন আমার কি করনিয়?কেউ জানালে উপকার হত। আমার ফেসবুক আইডি: http://www.fb.com/mr.himelhasan
আপনার কার্ড কি ইন্টারন্যাশনালি অনলাইন ট্রান্সেকশন এর জন্য উপযুক্ত?
না। আমার আসলে এই বষয়ের দিকে আগে নজর দেয়া উচিত ছিল। অনেকেই বলছে যেহেতু মাস্টার কার্ড নাই তাই dainahost থেকে ডোমেইন কিনতে। dainahost কেমন হবে জানাবেন প্লিজ।
মাসে ১ থেকে দেড়লাখ পেজভিউ হয় কত জিবি হোস্টিং নিবো?
পেইজ ভিউ এর সাথে হোস্টিং সাইজের কোন ঝামেলা নাই। আপনার দরকার আনলিমিটেড ব্যান্ডউইথ দেবে এরকম একটা প্লান। যদিও আনলিমিটেড বলতে আসলে কিছু নেই।
কি ধরনের সাইট সেটা জানলে আরো স্পেসিফিকালি সাজেস্ট করা যাবে। হোস্টিং অনেকগুলি ব্যাপারের উপর নির্ভরশীল।
ভাইয়া আপনার ইমেইলটা দেন
সাইটের যোগাযোগের ঠিকানা দেয়া আছে। মেইল করুন।
Digital Ocean থেকে কি ডুয়াল কারেন্সি প্রিপেইড মাস্টার কার্ড দিয়ে VPS কেনা যায়?
জ্বী, যাবে।
লেখাটি পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম |
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ |
বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে কোন হোস্টিং কেনা ভালো হবে।
ডোমেইন btcl এর কাছ থেকে কিনতে চাচ্ছি।
প্লিজ প্লিজ প্লিজ
শুরুর জন্য নেইমচিপ ভালো
অনেক সাইটে এ-সম্পর্কে পড়লাম। তবে আপনার লেখাটা বেস্ট হয়েছে।