আমাদের মাতৃভাষা যদি বাংলা হয়ে থাকে তবে বিশ্বের মাতৃভাষা হল ইংরেজী। আজকের বিশ্বে ইংরেজী না জানা মানে হল আপনি আধুনিক দুনিয়ার সব কিছু থেকে পিছিয়ে পড়ছেন। সে যাই হোক, আমার আজকের লেখাটার উদ্দেশ্য ইংরেজি ভাষাটাকে মহান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা নয়। বরং – ইংরেজী জানাটা একজন ব্লগারের জন্য কতটা জরুরী সে সম্পর্কে ধারনা দেয়া।
যারা এখানে ওয়েব স্কুলে আমাদের সাথে যোগ দিয়েছেন বা দেবেন- আমি ধরে নিচ্ছি তাদের বেশিরভাগই এসেছেন নিজের প্রোফেশনাল ডেভেলপমেন্ট করতে। আর একথা অনস্বীকার্য যে ইংরেজী না জানলে যে কোন প্রফেশনে আপনি পিছিয়ে পড়বেন। আবার সেটা যদি হয়ে থাকে অনলাইন বেইসড কোন প্রফেশন যেমনঃ- ব্লগিং, ফ্রী-ল্যান্সিং বা ওয়েব ডিজাইন তবে তো কোন কথাই নেই। অনলাইনের ৯৯ ভাগ কাজ এখনও ইংরেজীতেই হয়ে থাকে।
ব্লগিং এবং ইংরেজী
আপনি যখন ব্লগিং করবেন তখন কিন্তু শুধু বাংঙ্গালীদের জন্য করছেন না। করছেন সারা পৃথিবীর মানুষের জন্য। কাজেই তাদের চেনা ভাষাতেই আপনাকে ব্লগিং করতে হবে। আপনার লেখা পড়ে যেন তারা মনে করে আপনি আনাড়ি নন- যে বিষয়ে আপনি লিখছেন সে বিষয়ে আপনার যথেষ্ঠ দক্ষতা আছে। শুধুমাত্র তখনি আপনি ব্লগিং এ সফলতা পাবেন।
একটা ছোট্ট প্রশ্নের জবাব দিয়ে নিই এখানে। আমি কেন বাংলায় লিখছি এখন?
– কারন আমার এই লেখাটা শুধুমাত্র বাঙ্গালীদের জন্য তাই। আপনি যদি একটি বাংলা ব্লগ চালাতে চান তবে তার ভাষাটা বাংলা হলে চমৎকার হয়। এই ব্যপারটিকে আমরা লোকালাইজেশন বলে থাকি। আপনি চাইলে বাংলাদেশীদের জন্য ইংরেজিতেও ব্লগিং করতে পারেন তবে সে ক্ষেত্রে অনেক বাঙ্গালীই হয়ত আপনার লেখাগুলো পড়ে কিছু বুঝবে না। কারন আমরা এখনও ইংরেজী ভাষাতে খুবই দুর্বল।
ছোট্ট একটা উদাহরন দেয়া যাক- আপনি ভেবে বের করুন তো বাংলাদেশে কোন ভাষার পত্রিকা বেশি চলে?
এরপর আসা যাক এডভারটাইজমেন্টের কথায়- অনেক এডভারটাইজার কোম্পানির শর্ত থাকে যে আপনার ব্লগের বা সাইটের মুল ভাষা ইংরেজী হতে হবে। কাজেই তারা non-English সাইটগুলোতে তাদের বিজ্ঞাপন দেবেনা। আর আপনি বঞ্ছিত হবেন রেভেনিউ থেকে।
আর্নিং এর কথা চিন্তা করছেন ব্লগিং থেকে? ইংরেজি ব্লগ না হলে তা অনেকাংশেই বিফলে যাবে। আর যারা এফেলিয়েট মার্কেটিং করবেন বলে মনস্থির করছেন তাদের জন্য ইংরেজি জানাটা বাধ্যতামুলক। ওটা বাদে আপনার পক্ষে আর্ন করাটা মোটামুটি অসম্ভব।
ফ্রী-ল্যান্সারদের জন্য নতুন করে কিছু বলার নেই- আমরা সবাই জানি যে বাইরের ক্লায়েন্টদের সাথে যোগাযোগ করার একমাত্র সহজ ভাষা হলো ইংরেজী।
কাজেই সকল আগ্রহী ব্লগার এবং নতুনদেরকে বলছি যারাই এই ব্লগিং কে নিজেদের পেশা হিসেবে নিতে আগ্রহী তারা আগে নিজের ইংরেজীটাকে পাকাপোক্ত করুন।
কিভাবে শিখবেন?
ওয়েব স্কুলের মূল লক্ষ্যটাই হল আগ্রহীদেরকে সাহায্য করা। অবশ্যই আমাদের সব কিছু ফ্রীতে নয়। কারন আমরা জানি- সস্তার তিন অবস্থা 🙂 🙁 :p ।
তবে এটুকু আপনাদের কে বলতে পারি কিভাবে আপনি ইংরেজীতে নিজের দক্ষতা বাড়াতে পারবেন। অনলাইনে প্রচুর সাইট আছে যারা আপনার ইংরেজি চর্চাতে সাহায্য করতে পারে। এরকমই একটি সাইট হলো- http://www.learnenglish-online.com/ । আপনি চাইলে গুগল থেকে আর বেশ-কিছু সাইট খুজে নিতে পারেন।
আমরা কাউকে বলছি না যে আপনাকে সাইফুরস এ ভর্তি হতে হবে ইংরেজী শেখার জন্য। ব্লগিং এর ইংরেজী শেখার জন্য আপনার ক্লাস ১০ এর ইংরেজী জানলেই চলবে। আর তার সাথে থাকতে হবে প্রচুর ইংরেজী মুভি, নিউজ, গল্প, ব্লগ ইত্যাদি পড়ার এবং দেখার ধৈর্য। আপনি যত বেশি লেখার এবং পড়ার চর্চা করবেন তত দক্ষ হবেন ইংরেজীতে।
আমরা দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে ওয়েব স্কুলে আপাতত ইংরেজী শেখার কোন ব্যবস্থা থাকবে না।
লেখাটা আর বড় করছি না। আপনাদের কিছু জানার থাকলে আমাদের সাথে ই-মেইলে, ফেইসবুক বা নিচে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
ইংরেজী না জানার সমস্যাটা আমাদের বাঙ্গালীদের নিজেরদের-ই তৈরি করা। আমি মনে করি সমস্যাটা যত বেশি পুথিগত বিদ্যার দুর্দশার কারণে হয় তার চেয়ে বেশি হয় আমাদের মানসিকতার জন্য। আমরা মনে করি যে আমরা ইংরেজীতে ভালো না তাই আমরা ইংরেজীতে কোন কিছুই আমরা পারবো না। অথচ আমরা নিজেরাই দেখছি যে একটু চেষ্টা করলেই ইংরেজীতে ভালো হওয়া সম্ভব। প্রচুর বাঙ্গালী বাইরের দেশে যেয়ে পড়ালেখা করে। তাহলে তারা কিভাবে পারে???
“কষ্ট না করলে কেষ্ট মেলে না” – বাংলায় ব্যবহৃত বহুল প্রচলিত প্রবাদ বাক্য। চেষ্টা করলে সবই সম্ভব, এই কথাটাই আমাদের মনে থাকে না।